অগ্রবর্তী সময়ের ককপিট
বাংলাদেশ রাজনীতি সর্বশেষ

বিদেশিরা প্রশংসা করে, কিন্তু কিছু রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যম শুধু সমালোচনা করে: ওবায়দুল কাদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিদেশিরা বাংলাদেশের উন্নয়ন–অর্জনের প্রশংসা করলেও দেশে তা ঠিকমতো হচ্ছে না বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ জন্য কিছু রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমকে দোষারোপ করেছেন তিনি।রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও গ্রন্থ বিতরণ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিদিন কিছু পত্রিকার পাতা খুললেই সরকারবিরোধী সমালোচনা। জঘন্য ভাষায় সরকারকে আক্রমণ করে। ব্লুমবার্গ বলছে, শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। ব্লুমবার্গের মতো ইনফ্লুয়েনশিয়াল নিউজ চ্যানেল আজ শেখ হাসিনার প্রশংসা করে আর বাংলাদেশের একশ্রেণির রাজনীতিক ও মিডিয়া তাঁকে প্রতিদিন আক্রমণ করে যাচ্ছে। অনলাইনে যার যা খুশি, তা-ই বলে যাচ্ছে।বিদেশিদের প্রশংসার ফিরিস্তি তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন-কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে একটি বিল এসেছে। সেখানে একজন রিপাবলিকান শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে মডেল। বাংলাদেশের উন্নয়ন, বাংলাদেশের অর্জন। আমাদের এখানে কিছু লোক এত ছোট কেন? বিদেশিরা প্রশংসা করে, কিন্তু আমাদের দেশ প্রশংসা করতে জানে না, ধন্যবাদ দিতে জানে না, কনগ্র্যাচুলেশন দিতে জানে না। জানে শুধু অকথ্য ভাষায় সমালোচনা করতে। এ প্রসঙ্গে আলোচনায় প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার করা নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলেন, ভুল তো অপরাধ নয়৷ কিন্তু অপরাধকে নিছক ভুল বলে কি এড়িয়ে যাওয়া যায়? অপরাধ, জঘন্যতম অপরাধ। অপরাধ চাইল্ড অ্যাবিউজ নয়, চাইল্ড এক্সপ্লয়টেশন। শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকে আসামি করার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বক্তব্য–বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা। সাংবাদিকদের ভয় দেখাতে এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সংকুচিত করতে এটা করা হয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়ে অবিলম্বে সাংবাদিক শামসুজ্জামানের মুক্তি এবং তিনি ও প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে তারা।এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিশ্বের যারা আজ বিবৃতি দিচ্ছে, উন্নত ও গণতান্ত্রিক বিশ্বের কোনো দেশে এ ধরনের চাইল্ড এক্সপ্লয়টেশন হলে কী হতো! সেই গণমাধ্যমের লাইসেন্স বাতিল করা হতো। এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা অনেক কিছু সহ্য করেন, ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেন। তিনি ঠান্ডা মাথায় কাজ করেন, গরম মাথায় করেন না। শিশুর হাতে আপনি ১০ টাকা ঘুষ দিয়ে এ ধরনের কথা পরে বললেন ভুল। ভুল হলে ভুলের জন্য কি কেউ দুঃখপ্রকাশ করেছে? কেউ কি ক্ষমা চেয়েছে? এটা তাদের ঔদ্ধত্য। তারাই ঠিক! সেই অহংকারে বুঁদ হয়ে নিজেদের বক্তব্যকে তারা সমর্থন করে যাচ্ছে৷ রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স বিবৃতি দিয়েছে যে সাংবাদিকদের ভয় দেখাতে সরকার একটি পত্রিকার রিপোর্টারকে গ্রেপ্তার করেছে, সম্পাদক ও রিপোর্টারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলা সরকার করেনি, মামলা বেসরকারিভাবে হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘ইট ইজ আ সিন। শুড এনি সিন গো আনপানিশড? এভাবেই কি হবে? যারা রিপোর্টার্স উইদাউট বডার্স, তাদের দেশে এ রকম কোনো ঘটনা ঘটলে তারা কী করত? এটার কি বিচার হতো না? এটার কি শাস্তি হতো না? একটা বাচ্চাকে কীভাবে ব্ল্যাকমেলিং করা হলো! বলা হলো, স্বাধীনতা দিয়ে কী করব। স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধের পাশে একটা বাচ্চাকে ব্যবহার করে দিনমজুরের নামে একটা উদ্ধৃতি দিয়ে তারা যে জঘন্য অপরাধ করেছে, সেই জঘন্য অপরাধের শাস্তি তাদের পাওয়া উচিত। উল্লেখ্য, স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত ওই প্রতিবদনে শিশুটির আলাদা বক্তব্য ছিল। সেখানে দিনমজুর জাকির হোসেনের বক্তব্যও ছিল। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে একটি গ্রাফিক কার্ড করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া হয়। সেখানে দিনমজুর জাকিরের বক্তব্যটি উদ্ধৃতি আকারে দেওয়া হয়। তবে ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল শিশুটির। বিষয়টি নজরে আসার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রাফিক কার্ডটি প্রত্যাহার করা হয়েছিল। পরে সংশোধনী দিয়ে প্রতিবেদনটিও আবার প্রকাশ করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য আমরাই লড়াই করেছি। অসংখ্য সাংবাদিককে যারা হত্যা করেছে, তারা আজ কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন দেয় ও সাংবাদিকের স্বাধীনতার জন্য মায়াকান্না করে। দেশে অসংখ্য সাংবাদিকের হত্যার হোতা তারা। সংবাদপত্রের অষ্টম ওয়েজ বোর্ডসহ সাংবাদিক কল্যাণের জন্য যা কিছু হয়েছে, সবকিছুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করেছেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় আমরাও বিশ্বাসী। এই স্বাধীনতা আমরা ক্ষুণ্ন করতে চাই না। কিন্তু সাংবাদিককেও রেসপনসিবল সাংবাদিক হতে হবে। স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে কারও উদ্ধৃতি স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশ করা দেশের প্রতি ভালোবাসার সামান্যতম নিদর্শন? এটা দেশকে কটাক্ষ করার শামিল। সেটাই তারা করেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, দণ্ডিত পলাতক আসামির (তারেক রহমান) আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে। অনলাইনে তাঁর বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আছে। ওই দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি প্রতিনিয়ত মিটিং করে যাচ্ছে। এখানে আইনের কোনো বাধা নেই। সবাই যেন নীরব দর্শকের ভূমিকায়। প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘জিয়াপুত্রের প্রশংসার বন্যা আজ শুনতে পাচ্ছি। এটাও বাংলাদেশে হচ্ছে৷ তারপরও এখানে স্বাধীনতা নেই। দিনভর মাইক একটা মুখে নিয়ে অশ্রাব্য গালিগালাজ করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তারপরও এখানে স্বাধীনতা নেই? আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন আমাদের বিষয় নয়। এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়। মির্জা ফখরুল বলছেন, সরকার কৌশল করে আগাম নির্বাচন দিচ্ছে৷ নির্বাচন তো দেবে নির্বাচন কমিশন৷ নির্বাচন আগে হোক বা পরে, আপনাদের ভরাডুবি অনিবার্য।

 

সম্পর্কিত খবর

দ. কোরিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী

gmtnews

লকডাউনে সেনাবাহিনীও মাঠে থাকবে: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

News Editor

১০ ডিসেম্বর আ.লীগের নেতা-কর্মীরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পাহারায় থাকবে: তথ্যমন্ত্রী

gmtnews

মন্তব্য করুণ

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই অপ্ট আউট করতে পারেন। স্বীকার করুন বিস্তারিত