অগ্রবর্তী সময়ের ককপিট
ক্রিকেট খেলা সর্বশেষ

মিচেলের ব্যাটিং নৈপুণ্যে প্রথমবারের মত ফাইনালে নিউজিল্যান্ড

মিচেলের ব্যাটিং নৈপুণ্যে প্রথমবারের মত ফাইনালে নিউজিল্যান্ড

ওপেনার ড্যারিল মিচেলের দুর্দান্ত এক ইনিংসের সুবাদে প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলো নিউজিল্যান্ড। গতকাল টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে।

প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৬৬ রান করে ইংল্যান্ড। জবাবে মিচেলের অপরাজিত ৭২ রানের কল্যাণে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৭ রান করে ম্যাচ জিতে ফাইনালে পা রাখে নিউজিল্যান্ড।

আবু ধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করতে নামে নিউজিল্যান্ড। ব্যাট হাতে নেমে দলকে ভালো শুরুই এনে দেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জস বাটলার ও জনি বেয়ারস্টো। ৫ ওভারে ৩৭ রান যোগ করেন তারা।

ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে বেয়ারস্টোকে থামান নিউজিল্যান্ডের পেসার এডাম মিলনে। ইনজুরিতে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়া জেসন রয়ের পরিবর্তে ইনিংস শুরু করতে নেমে ১৭ বলে ১৩ রান করেন বেয়ারস্টো। দ্বিতীয় উইকেটে ডেভিড মালানকে নিয়ে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন বাটলার। বড় ইনিংস খেলার ইঙ্গিতই দিচ্ছিলেন বাটলার।

কিন্তু বাটলারকে লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন নিউজিল্যান্ডের স্পিনার ইশ সোধি। ৪টি চারে ২৪ বলে ২৯ রান করেন এবারের আসরে এ পর্যন্ত  একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান বাটলার।

দলীয় ৫৩ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর দলের বড় স্কোরের পথ মসৃণ করেন মালান ও মঈন আলি। উইকেটের সাথে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে রানের গতি বাড়ান তারা। ১৪তম ওভারে দলের স্কোর শতরানে পৌঁছে দেন মালান-মঈন জুটি।

টিম সাউদিকে ছক্কা মেরে ১৬তম ওভার শুরু করেছিলেন মালান। তবে দ্বিতীয় বলে মালানের বিদায় নিশ্চিত করেন সাউদি। আউট হওয়ার আগে ৩০ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪১ রান করেন মালান। মঈনের সাথে ৪৩ বলে ৬৩ রান দলকে উপহার দেন তিনি।

মালানের সাথে দারুন এক জুটি গড়ার পর লিয়াম লিভিংস্টোনকে নিয়েও ২৪ বলে ৪০ রানের ঝড়ো জুটি গড়েন মঈন। এতে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৬৬ রানের সংগ্রহ পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। লিভিংস্টোন ১০ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ১৭ রান করেন।

ইনিংসের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে বাউন্ডারি মেরে ৩৬ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ন করেন মঈন। শেষ পর্যন্ত দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রান করে অপরাজিত থাকেন মঈন। ৩৭ বলে ৩টি চার ও ২িিট ছক্কা মারেন তিনি। অধিনায়ক ইয়োইন মরগান অপরাজিত ৪ রান করেন। নিউজিল্যান্ডের সাউদি-মিলনে-সোধি ও নিশাম ১টি করে উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ১৬৭ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই মহাচাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। ইংল্যান্ডের পেসার ক্রিস ওকসের প্রথম বলেই চার মারেন ওপেনার মার্টিন গাপটিল। কিন্তু তৃতীয় বলে ৪ রান করা  গাপটিলকে লেগ বিফোর আউট করেন ওকস।

তৃতীয় ওভারে ইংল্যান্ডকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন ওকস। অবশ্য নিজের মূল্যবান উইকেটটি ওকসকে উপহারই দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। স্কুপ শট খেলতে গিয়ে আদিল রশিদকে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়া  কিউই অধিনায়ক ১১ বলে ৫ রান করেন।  এমন অবস ন্থায়  ১৩ রানে ২ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।

মহাচাপে পড়া নিউজিল্যান্ডকে এরপর রক্ষা করেন আরেক ওপেনার ড্যারিল মিচেল ও ডেভন কনওয়ে। শুরুতে উইকেট হারানোয় পাওয়ার প্লেতে ৩৬ ও ১০ ওভার শেষে ৫৮ রানের বেশি তুলতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। তবে মিচেল ও কনওয়ের দৃঢ়তায় ১৩ ওভারে ৯২ রান পেয়ে যায় কিউইরা। জমে যাওয়া মিচেল-কনওয়ে জুটিতে ভাঙ্গন ধরিয়ে ইংল্যান্ডকে ম্যাচে ফেরার পথ দেখান অকেশনাল স্পিনার লিভিংস্টোন। ৩৮ বলে ৪৬ রান করা কনওয়েকে শিকার করেন তিনি। কনওয়ের ইনিংসে ৫টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। মিচেলের সাথে তৃতীয় উইকেটে ৬৭ বলে ৮২ রান দলকে এনে দেন কনওয়ে।

কনওয়ের বিদায়ে উইকেটে আসেন  গ্লেন ফিলিপস। ২ রানে ফিলিপসকে আটকে দেন লিভিংস্টোন। ১২ রানের ব্যবধানে নিউজিল্যান্ডের ২ উইকেট তুলে নিয়ে দারুনভাবে ইংল্যান্ডকে খেলায় ফেরান লিভিংস্টোন। এতে জয়ের জন্য  শেষ ৪ ওভারে ৫৭ রানের প্রয়োজন পড়ে নিউজিল্যান্ডের। আস্কিং রেট ১৪ পার হয়। এ অবস্থায় মারমুখী হয়ে উঠেন ফিলিপসের বিদায়ের ক্রিজে আসা নিশাম।

১৭তম ওভারে ২৩ রান নেন নিশাম। পেসার ক্রিস জর্ডানের করা ঐ ওভারে ২টি ছক্কা ও ১টি চার মারেন নিশাম। এতে ১৮ বলে জয়ের সমীকরন দাঁড়ায় ৩৪ রানে।

রশিদের করা ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে নিশাম ও চতুর্থ বলে ছক্কা মারেন মিচেল। কিন্তু ঐ ওভারের শেষ বলে নিশামকে থামান রশিদ। ১০ বলে ৩টি ছক্কা ও ১টি চারে ২৬ রানের সময়পযোগী ইনিংস খেলেন নিশাম। তাতে জয় পেতে শেষ  ১২ বলে ২০ রানের দরকার পড়ে নিউজিল্যান্ডের।

১৯তম ওভারে বল হাতে আক্রমনে ছিলেন শুরুতেই ২ উইকেট তুলে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাকুফটে ঠেলে দেয়া ওকস। ঐ ওভারে মিচেল স্যান্টনারকে নিয়ে ২০ রান তুলে নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে তুলেন মিচেল। প্রথম বলে ২, দ্বিতীয়-তৃতীয় বলে ছক্কা, চতুর্থ বলে ১ রান নেন মিচেল। পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে মিচেলকে স্ট্রাইক দেন স্যান্টনার। আর শেষ বলে বাউন্ডারি দিয়ে নিউজিল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন মিচেল।

৪৮ বল খেলে ৪টি করে চার-ছক্কায় অপরাজিত ৭৩ রান করে ম্যাচ সেরা হন মিচেল। এ ম্যাচে ২১তম টি-টোয়েন্টিতে এসে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। ১ রানে অপরাজিত ছিলেন স্যান্টনার। ইংল্যান্ডের ওকস-লিভিংস্টোন ২টি করে উইকেট নেন।

আগামী ১৪ নভেম্বর ফাইনাল খেলবে নিউজিল্যান্ড। আগামীকাল টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া। ঐ ম্যাচের বিজয়ী দল ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ হবে।

সম্পর্কিত খবর

“কঠোর লকডাউন” আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর পরামর্শ

News Editor

মর্ডানা ও সিনোফার্মার ৪৫ লাখ টিকা ঢাকায় পৌঁছেছে

News Editor

১০ জোড়া বিশেষ ট্রেনে খুলনায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভার পথে নেতাকর্মীরা

Zayed Nahin

মন্তব্য করুণ

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই অপ্ট আউট করতে পারেন। স্বীকার করুন বিস্তারিত