December 15, 2025
অগ্রবর্তী সময়ের ককপিট
ক্রিকেট খেলা বাংলাদেশ বিনোদন বিশ্ব সর্বশেষ

মিরাজের ব্যাটিং ও অফ স্পিনারের ভূমিকা: বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন যোদ্ধা

আত্মবিশ্বাস আর সাহসের কমতি থাকে না কখনোই। দলের যখন যা চাহিদা, তা মেটাতে সবার আগে হাত ওঠে মেহেদী হাসান মিরাজের। দলের জন্য সামর্থ্যের সবটা নিংড়ে দেওয়ার মানসিকতার জন্য তিনি বরাবরই কোচদের প্রিয় ছাত্র, অধিনায়কের জন্য যেকোনো লড়াইয়ের অগ্রসৈনিক। প্রতিপক্ষের রান থামাতে হবে? উইকেট যেমনই হোক, তিনি একটা না একটা উপায় বের করে ফেলবেন। ব্রেক থ্রু দরকার? আক্রমণাত্মক বোলিং করে সেটা এনে দেবেন। পাওয়ারপ্লে হোক কিংবা মাঝের ওভারে, দরকার হলে ডেথ ওভারেও হাত ঘুরাবেন। পয়েন্ট, কাভার কিংবা যেকোনো বাউন্ডারির সীমানায় ফিল্ডিং করতেও কোনো আপত্তি নেই মিরাজের।

বোলিং-ফিল্ডিংয়ের সেই মানসিকতা ইদানীং ব্যাটিংয়েও টেনে আনছেন মিরাজ। বাংলাদেশ দলে ব্যাটিংয়েও তিনি এখন ‘ম্যান ফর অল অকেশন’। সব দায়িত্বে, সব মুহূর্তে অবদান রাখতে শুরু করেছেন। ধারাবাহিকভাবে লোয়ার অর্ডারে রান করছেন, দরকার হলে উঠে আসছেন টপ অর্ডারে। মাঝের ওভারেও খেলছেন পরিণত মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের মতো। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে ধরনের ব্যাটসম্যানদের বলা হয় ‘ফ্লোটার’, যখন যেখানে দরকার, সেখানেই নামিয়ে দেওয়া যায়, বাংলাদেশ দলে মিরাজও হয়ে উঠেছেন সে রকমই একজন—আদর্শ ‘ফ্লোটার’।

এর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উদ্বোধনে নেমে সেঞ্চুরি করলেও কালই প্রথম তিনে নামলেন মিরাজ। ব্যাটিং অর্ডারের ৪ নম্বর পজিশন বাদে ২ থেকে ৯ পর্যন্ত সব জায়গায় তাঁর ব্যাটিং করা হয়ে গেছে। কিন্তু কোন অবস্থায় কী করণীয়, তা নিয়ে মিরাজের কোনো সংশয় নেই বললেই চলে। কাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৫৬ রানের ম্যাচেও কোনো তাড়াহুড়া করেননি। ব্যাট হাতে সময় নিয়েছেন, ৭৩ বলে ৫৭ রানের ইনিংস খেলে আফগানিস্তানকে ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলেছেন। এর আগে বল হাতে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ম্যাচসেরার পুরস্কারের ন্যায্য দাবিদারও তিনিই।

এবার বিশ্বকাপের দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে ফিরে যাওয়া যাক। গুয়াহাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ দল ২৬৪ রান তাড়া করছিল। সে ম্যাচেও মিরাজকে পাঠানো হয় তিনে। মাঠ ছাড়েন ৬৪ বলে অপরাজিত ৬৮ রান করে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরের প্রস্তুতি ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামা দলের বিপদে চারে খেলেন মিরাজ। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৮৯ বলে ৭৪ রান। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ ধরলে ইনিংসের শুরুতে ব্যাটিংয়ে এনে টানা তিনটি ফিফটি করলেন মিরাজ। সেটাও তিনটি ভিন্ন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। আরেকটু পেছনে গেলেই খুঁজে পাবেন এশিয়া কাপে আফগানদের বিপক্ষে উদ্বোধনে নেমে মিরাজের ক্যারিয়ার–সেরা ১১২ রানের ইনিংসটি। আর মিরাজের লোয়ার অর্ডারে নেমে অবিশ্বাস্য কীর্তি গড়ার কথা নাই–বা বলা হলো। ভারতের বিপক্ষে গত বছরের ডিসেম্বরে পরপর দুটি ম্যাচ জেতানো ইনিংস তো স্মৃতিতে এখনো তাজা।

কাল ধর্মশালায় ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সের পর মিরাজের কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছিল তাঁর একেকবার একেক ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া নিয়ে। জবাবে বিভিন্ন পজিশনে মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতার কথাটা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘মানিয়ে নেওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুধু আমি নই, প্রত্যেকেই মানিয়ে নিয়ে খেলছে। বড় কিছু অর্জন করতে গেলে মানিয়ে নেওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ বলেছেন লোয়ার অর্ডার ও টপ অর্ডারে ব্যাটিংয়ের পার্থক্যের কথাও, ‘আমি তো সব সময় আটে ব্যাটিং করেছি। সেখানে সব সময় বড় রান করার সুযোগ থাকে না, বল কম থাকে। তবে চেষ্টা করি সুযোগ পেলে যেন শতভাগ দিতে পারি।’ একই প্রসঙ্গে অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘আটের চেয়ে ওপরে যেকোনো জায়গায় ব্যাটিং করা অবশ্যই ভালো। কারণ, আমি বিশ্বাস করি যে আমি ব্যাটিং পারি।’

মিরাজ যে ব্যাটিংটা ভালোই পারেন, সেটা এখন সবারই জানা। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে নিয়মিত চারে ব্যাটিং করেছেন। তবে জাতীয় দল মিরাজকে শুরু থেকে অফ স্পিনারের ভূমিকায়ই দেখে আসছে। দৃষ্টিভঙ্গিটা বদলায় গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে। দলের ওপেনার–সংকট অপ্রত্যাশিতভাবে বের করে আনে মিরাজের ব্যাটসম্যান সত্তা। বাংলাদেশ দল যখন হন্যে হয়ে ওপেনার খুঁজছিল, তখন গত সেপ্টেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে মিরাজকে পাঠানো হয় ইনিংস শুরু করতে।

সম্পর্কিত খবর

তৃতীয় দিনেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি সুন্দরবনের আগুন

gmtnews

প্রধান উপদেষ্টাকে ইউএই প্রেসিডেন্টের ফোন

gmtnews

শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দলে আসছে বেশ পরিবর্তন

Shopnamoy Pronoy

মন্তব্য করুণ

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই অপ্ট আউট করতে পারেন। স্বীকার করুন বিস্তারিত