দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়ার লঘুচাপটি ধীরে ধীরে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের দিকে সরে আসছে। শক্তি বাড়িয়ে এটি শুক্রবার (২৪ মে) নিম্নচাপ, তার দু’একদিনের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় রিমালে (Re-Mal) রূপ নিতে পারে।
বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়াবিদরা এমন তথ্য জানিয়েছেন। আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে প্রথমে নিম্নচাপ, পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার আগে এটি গতিমুখ বোঝা যাবে না।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী এম শর্মা জানিয়েছেন, লঘুচাপটি শুক্রবার শেষ রাতের দিকে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। শনিবার এটি উত্তর পূর্ব বঙ্গোপসাগরে এসে পৌঁছাবে। ওই সময়ে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় রিমালে পরিণত হতে পারে। এ নামটি ওমানের দেওয়া।
তিনি এক পূর্বাভাসে বলেন, লঘুচাপটি সর্বোচ্চ শক্তি সঞ্চয় করার সম্ভাবনা রয়েছে। কোনো কোনো মডেল বলছে এটির গতিপথ হতে পারে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলের দিকে। আবার কোনো কোনো মডেল বলছে পশ্চিমবঙ্গে এটি আছড়ে পড়তে পারে। উপকূলে আসতে পারে আগামী ২৬ মের দিকে।
লঘুচাপের কারণে সাগর বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। কেননা, এর কেন্দ্রে বর্তমানে বাতাসের গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার, যা ওঠে যাচ্ছে ৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এটি গতিবেগ উঠে যেতে পারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত, সে সময় সাগর ব্যাপক বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে। তারপর দিন এটির গতিবেগ উঠে যেতে পারে ৭০ কিলোমিটারে।
তবে লঘুচাপটি এখনো বাংলাদেশের উপকূল থেকে অনেক দুরে এবং তামিলনাড়ু ও অন্ধ্র উপকূলের কাছাকাছি থাকায় দেশের মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকাগুলোর জন্য কোনো সতর্কতা নেই।
তিনদিনের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, বান্দরবান, খুলনা, মোংলা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, খেপুপাড়া এবং ভোলা জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বাড়তে পারে।
শুক্রবার ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
শনিবার (২৫ মে) খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় ও ঢাকা এবং সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে ।
অন্য এক পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।