বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ভালো জায়গা। এখানে কিছু সমস্যা হয়তো আছে, তবে সম্ভাবনাও প্রচুর। এখানকার ব্যবসায়ী ও সরকার মিলে আমরা সমস্যাগুলোর সমাধান করব।’
আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ও ইইউ আয়োজিত এক সেমিনারে বাণিজ্যমন্ত্রী ইউরোপীয় বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে আপনারা ঠকবেন না।’
বাংলাদেশে পরিচালিত ইইউর কোম্পানিগুলোর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণবিষয়ক এ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন টিপু মুনশি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এক মাস আগে আমি আমস্টারডামে এরকম একটি সেমিনারে যোগ দিয়েছিলাম। সেখানেও একই কথা বলেছি। বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সমস্যা আছে। এখন ঋণপত্র খুলতে সমস্যা হচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে একমত যে কতগুলো সমস্যা আছে। কিন্তু ইতিবাচক বিষয়ও আছে। আমাদের রপ্তানি বাড়ছে। এ বিবেচনায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমরা আরও বিনিয়োগ প্রত্যাশা করি।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিঞা বলেন, ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত আছে। আমাদের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল আছে। ইউরোপের বন্ধুদের বলব, আপনারা যদি চান, এখানে ভালো কোম্পানির সঙ্গে সমন্বয় করতে পারবেন। আমাদের সবার একটিই উদ্দেশ্য, বাংলাদেশে অধিক বিনিয়োগ। আর যে সংকট ছিল, আগামী ডিসেম্বরে সেটি কেটে যাবে। বিডা থেকে বিনিয়োগকারীরা বিশ্বমানের সেবা পাবেন।’
শুভেচ্ছা বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তার বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও বিদ্যমান যেসব সুবিধা ইইউ থেকে বাংলাদেশ পেতে পারে, সেগুলো অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
সেমিনারে ঢাকায় ইইউর রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউর বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা আছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে ইউরোপীয় দেশগুলোর বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনামে ইইউর সরাসরি বিনিয়োগ আছে ২৮ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে বাংলাদেশে ইইউর বিনিয়োগ ৫ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিয়োগ ও বাণ্যিজ্যর সম্পর্ক আরও গভীর করতে চাই।’
বাংলাদেশের শ্রম আইনে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরামর্শও দেন ইইউর রাষ্ট্রদূত।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাত আমাদের পথ দেখিয়েছে কীভাবে আমরা রপ্তানিতে ভালো করতে পারি। সেই পথেই অন্যান্য খাতকে হাঁটতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক পুরোনো। বন্ধুত্বপূর্ণ এ সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিনিয়োগ ও ব্যবসা–বাণিজ্য আরও বাড়াতে হবে।’